নবগঙ্গা নদী থেকে বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় নড়াইলের কালিয়ায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইসলামী ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী মাসুদ রানা নিহতের ঘটনায় দলনেতা কাজল মোল্যাসহ ৩৬ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের ভাই মামুন শেখ বাদি হয়ে কালিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। ওই ঘটনায় পুলিশ বন্দুকের ৮ রাউন্ড তাজা গুলিসহ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কাজল মোল্যার লাইসেন্সকৃত একটি দো-নালা বন্দুক ও ৩ রাউন্ড গুলির খোষা উদ্ধার করেছে। পুলিশ কাজল মোল্যাসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে বুধবার রাতে নিহতের দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার বিবরনে জানা যায়, উপজেলার নবগঙ্গা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ বালু উত্তেলনকে কেন্দ্র করে ওই গ্রামের মকবুল মোল্যার ছেলে কাজল মোল্যা ও একই গ্রামের হারুন শেখের ছেলে আমিনুর শেখের মধ্যে পূর্ব শত্রুতার সৃষ্টি হয়। তারই জের ধরে ওইদিন সকাল পৌনে ৯ টার দিকে কাজল মোল্যার নেতৃত্বে স্বশস্ত্র আসামীরা কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও পুরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সরদার তবিবর রহমানের বাড়িতে তাদের উপর হামলা চালিয়ে তার ভাই মাসুদ রানাকে গুলি করে হত্যাসহ অন্যদেরকেও গুলি করে, কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় এবং ব্যাপক ভাংচুর ও লুট পাট করে।
আরো পড়ুন
- কালিয়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিজয় দিবসের শুভেচ্ছার পোষ্টার ছিড়লো দুবৃত্তরা
- কালিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটি
- কালিয়ায় নদীতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
- কালিয়ার চাচুড়ী বাজারে ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিল
- ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকায় নড়াইলের কালিয়ায় ১৪৪ ধারা জারি
হামলা চলাকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৪ বছরের শিশু ইভা খানম ও তার মা সাথী বেগমসহ (২২) মাসুদ রানা (৩৫) আঃ রহমান শেখ (৩৫), অনিক শেখ (২৭), আমিনুর সরদার (৪৫), ইমরান সরদার (৩০), রাজীব শেখ (২৫),হেকমত শেখ (৩৫) গুলিবিদ্ধসহ মুকুল শেখ (৩৫), মনোয়ারা বেগম (৩৫), তিশা খানম (১৮) ও শফি সরদার (৬৫) গুরুতর আহত হন। গুলিবিদ্ধ মাসুদ রানাকে চিকিৎসার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। হত্যাকান্ডের পর থেকে বুধবার রাতভর অভিযান চালিয়ে কালিয়া থানা পুলিশ মামলার প্রধান আসামী কাজল মোল্যা, তার ভাই টনি মোল্যা ও একই গ্রামের ফেরদৌস মোল্যার ছেলে সোহান মোল্যাসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।
নড়াইলের সহকারি পুলিশ সুপার রিপন চন্দ্র সরকার বলেছেন, মাসুদ হত্যার ঘটনায় ৩৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার প্রধান আসামী কাজল মোল্যাসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বন্দুকের ৮ রাউন্ড তাজা গুলিসহ কাজলের লাইসেন্সকৃত দো-নালা বন্দুক ও ঘটনাস্থল থেকে ৩ রাউন্ড বন্দুকের গুলির খোষা উদ্ধার করা হয়েছে। পলাতক আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।