করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে অধিকহারে সংক্রমিত এলাকাগুলোতে লকডাউনের পাশাপাশি কারো যেন খাবারের অভাব না হয় সেজন্য অর্থনীতির চাকাকেও সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৪ জুন রোববার একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টম (বাজেট) অধিবেশনে সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ’র মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে গৃহীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। খবর বাসসের
এ সময় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস আতঙ্ককটা এখন এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যেটা খুব দুঃখজনক। তবু, আমরা ঠিক করেছি কোন কোন এলাকায় বেশি (করোনা সংক্রমণ) দেখা যাচ্ছে সেটা লকডাউন করা। আমরা সেটা আটকাচ্ছি যাতে সেখান থেকে আর কোনভাবে সংক্রমিত না হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘সাথে সাথে আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলো যেন সচল থাকে সেদিকেও আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি এবং আমরা একটা বাজেটও দিতে সক্ষম হয়েছি।
বাস্তবতার নিরীখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মানুষগুলোকে তো আমরা করোনার ভয়ে না খাইয়েতো মারতে পারি না। তাদের বেঁচে থাকার ব্যবস্থাতো আমাদের নিতে হবে। তাঁদের জীবনযাত্রাটা যেন চলে সে ব্যবস্থাটাতো আমাদের করতে হবে।’
করোনা ভাইরাসকে অত্যন্ত শক্তিশালী আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত পশ্চিমা দেশগুলোতে এই রোগের যে ধরন দেখেছেন তাতে এই রোগের সংক্রমণ এবং মৃত্যুহার ক্রমেই বেড়ে গিয়ে একটি পর্যায়ে গিয়ে থামে। বর্তমানে যে ওয়েভটি দক্ষিণ এশিয়া তথা বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চলছে।
আরো পড়ুন
- কালিয়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিজয় দিবসের শুভেচ্ছার পোষ্টার ছিড়লো দুবৃত্তরা
- কালিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটি
- কালিয়ায় নদীতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
- কালিয়ার চাচুড়ী বাজারে ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিল
- ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকায় নড়াইলের কালিয়ায় ১৪৪ ধারা জারি
যে কারণে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে তার সরকার, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি জনগণকে বোঝাতে যে, আপনারা অন্তত একটু স্বাস্থ্যবিধিটা মেনে চলেন। কারণ, এটা খুব সাংঘাতিক একটা সংক্রামক ব্যাধি। কাজেই, সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বর্তমান পরিস্থিতিকে যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে এ সময় তার দু’জন সারথীর বিয়োগকে অত্যন্তদুঃখজনক আখ্যায়িত করে তাদের বিভিন্ন অবদানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, ‘এটাও এক ধরনের একটা যুদ্ধ আর সেই সময় আমার দুইজন যাদেরকে সবসময় পাশে পেয়েছি প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে পেয়েছি। কাজেই, তাদেরকে হারানো অত্যন্ত কষ্টদায়ক।’
‘আমি মোহাম্মদ নাসিম এবং শেখ মো. আব্দুল্লাহর রুহের মাগফিরাত কামনা করে তাদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি,’ বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘তাদের পরিবারের সদস্যদের শুধু এটুকুই বলবো যে, ধৈয্য ধরতে হবে। কারণ স্বজন হারাবার বেদনাটা যে কি সেটাতো আমি জানি।’
তিনি বলেন, ‘সবাইকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ‘সবর’ দান করুন, আর আমাদের ছেড়ে যারা চলে গেছেন তাঁদের বেহেস্ত নসীব করুন, সেই কামনাই করি।’
মোহাম্মদ নাসিম ও শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন, সরকারি দলের বেগম মতিয়া চৌধুরী, হাবিবে মিল্লাত, মৃণাল কান্তি দাস, বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির মোস্তফা লুতফুল্লাহ।
আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে সংসদে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
এরপর মোহাম্মদ নাসিম ও এডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা প্রর্দশনের জন্য এক মিনিট নিরবতা পালন ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া।
এরপর প্রথা অনুযায়ী কোন সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে সংসদ মূলতবির রেওয়াজ থাকায় এদিনের সংসদ মূলতবি ঘোষণা করা হয়।